স্টাফ রিপোর্টার: দেশে তিন দশকে রেশম উৎপাদন তলানিতে নেমেছে। ১৯৯০-২০২০ অর্থবছর পর্যন্ত রেশম গুটি উৎপাদন, তুঁত চারা উৎপাদন ও রোপন, রোগমুক্ত ডিম উৎপাদন ও বিতরণ এবং রেশম সুতা উৎপাদন প্রায় ৫ গুণ কমেছে। এদিকে, রাজশাহীর বাঘা উপজেলার মীরগঞ্জে বীজাগারের উৎপাদন কমে যাওয়ায় শ্রমিকরা পড়েছে বেকায়দায়।
জানা গেছে, ১৮৬০ সালে উপজেলার মীরগঞ্জে নীলচাষের জন্য আগমন ঘটে ইংরেজদের। এই গ্রামে তারা গড়ে তোলে নীলকুঠি। আজও সেই নীল চাষের স্বাক্ষ্য বহন করছে উপজেলার পদ্মা নদীর তীরবর্তী মীরগঞ্জ গ্রাম। এই গ্রামে রয়েছে শ্রমিকগোষ্ঠী ও কুঠির ধবংসাবশেষ নীল কুঠি। তবে শোষকগোষ্ঠী ইংরেজদের পতন ঘটেছে অনেক আগে। তাদের শোষণের নানা স্মৃতি চিহ্ন আজও বহন করে চলছে মীরগঞ্জ গ্রামের মানুষ।
মীরগঞ্জ গ্রামের শ্রমিক আবদুর রহমান বলেন, এক সময় এলাকার লোকজন জমিতে রেশম চারা উৎপাদন করত। বীজাগার থেকে ডিম এনে চাষ করতেন বাড়িতে। এখন তা আর হয় না। স্থানীয়রা রেশম চাষ করতে আগ্রহ হারিয়েছে। যেটুকু হচ্ছে সরকারিভাবে। হারিয়ে যাচ্ছে বীজাগারের ঐতিহ্য। তাই কাজ কমে যাওয়ায় বেকায়দায় পড়েছি।
মীরগঞ্জের তোয়ায়েল হোসেন বলেন, নীল চাষের সুবিধার্থে ইংরেজরা এই অঞ্চলের রাস্তাঘাটের উন্নয়ন ঘটায়। নীলকররা বেশিরভাগ সময় ঘোড়ায় যাতায়াত ও চলাফেরা করত। ব্যাপক কষ্টদায়ক ও নির্যাতনমূলক নীলচাষ করতে কৃষকরা একপর্যায়ে অনাগ্রহ প্রকাশ করে।
মীরগঞ্জ রেশম বীজাগারের (ভারপ্রাপ্ত) ব্যবস্থাপক আবদুল মালেক বলেন, এ বছর বীজাগারের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে দেড় লাখ ডিম। যা চারটি স্কিমে উৎপাদন করা হবে। ইংরেজদের শাসনামলে যে নীল চাষ করা হয়েছিল, সেই নীলগাছের নমুনা হিসাবে কয়েকটি গাছ রাখা হয়েছে। বর্তমানে নতুন প্রজন্মের সন্তানরা দেখতে আসে। স্থানীয়দের সহায়তা পেলে আগের মতো রেশম চাষের উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব হবে। ভবনগুলো কালের স্বাক্ষী হয়ে আছে, ইংরেজদের সেই নীল চাষ আর নীলকুঠি। তবে ১০০ বিঘা জমির উপর বর্তমানে রেশম বীজাগার স্থাপন করা হয়েছে।
Leave a Reply