1. admin@renesus.news : admin :
  2. Biddut@renesus.news : Biddut :
  3. renesus.news@gmail.com : renesus :
  4. info@renesus.news : shamaun :
বুধবার, ০৭ মে ২০২৫, ১১:৪২ অপরাহ্ন

কোন জমিতে কোন ফসল, সিদ্ধান্ত আমনেই

রিপোটারের নাম :
  • প্রকাশের সময় : রবিবার, ৬ নভেম্বর, ২০২২
  • ১০৩ বার পড়া হয়েছে

কৃষি ডেস্ক : বরেন্দ্রখ্যাত রাজশাহী অঞ্চলের জমি ছিল এক ফসলি। খরাপীড়িত এই অঞ্চলের চাষাবাদ ছিল বৃষ্টিনির্ভর। বর্তমানে সেচের সংস্থান হওয়ায় এখন সেসব জমিতে ফলছে তিনটি ফসল। বছরজুড়েই ফলছে ধান।

কৃষি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কোন জমিতে কৃষক কি ফসল ফলাবেন, সেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে আমন মৌসুমেই। এজন্য আমন মৌসুমে সল্পমেয়াদি জাত আবাদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে চাষিদের। কেবল আমনই নয়, রবি ফসল, আউশ কিংবা বোরোতেও এখন স্বল্পমেয়াদি জাত উদ্ভাবন করেছেন দেশের বিজ্ঞানীরা।

আষাঢ়ে বীজতলায় বীজ বোনার মাধ্যমে রোপা আমন মৌসুম শুরু করেন চাষি। সেই চারা জমিতে রোপণ হয় শ্রাবণ-ভাদ্র মাসে। এলাকাভেদে কার্তিক-অগ্রহায়ণ-পৌষে ধান ওঠে কৃষকের গোলায়। চিরায়ত এই কৃষিতেই অভ্যস্ত রাজশাহী অঞ্চলের চাষিরা।

রাজশাহী, নওগাঁ, নাটোর ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিয়ে রাজশাহী কৃষি অঞ্চল। আঞ্চলিক কৃষি দফতরের হিসাবে ২০০৮-২০০৯ মৌসুমে এই চার জেলায় রোপা আমন ছিল ৪ লাখ ৭ হাজার ১৮০ হেক্টর। ওই মৌসুমে কৃষকের গোলায় ওঠেছে ১০ লাখ ১৮ হাজার ১১২ টন। রাজশাহীতে ৮৬ হাজার ৭৮০ হেক্টরে ২ লাখ ২৭ হাজার ৭৭০ টন, নওগাঁয় ২ লাখ ৯ হাজার ১০ হেক্টরে ৫ লাখ ১৪ হাজার ২৮৫ টন, নাটোরে ৫৫ হাজার ৪৫০ হেক্টরে ১ লাখ ৩৬ হাজার ৭২১ টন এবং চাঁপাইনবাবঞ্জে ৫৫ হাজার ৯৪০ হেক্টরে ১ লাখ ৩০ হাজার ৩৩৬ টন ধান উৎপাদন হয়েছে।

সবশেষ গত আমন মৌসুমে রাজশাহী, নওগাঁ, নাটোর ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় ৩ লাখ ৮৫ হাজার ৯২৯ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ছিল। তাতে ফলন হয়েছে ১২ লাখ ৭ হাজার ৯৯২ টন। এরমধ্যে রাজশাহীতে ৭৭ হাজার ৯৬ হেক্টরে ২ লাখ ৫৩ হাজার ৫৫৯ টন, নওগাঁয় ১ লাখ ৯১ হাজার ৬৬৪ হেক্টরে ৫ লাখ ৯ হাজার ৪৩৫ টন, নাটোরে ৬৩ হাজার ৯৫৯ হেক্টরে ২ লাখ ৪ হাজার ৯৬৪ টন এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৫৩ হাজার ২১০ হেক্টরে ১ লাখ ৫৯ হাজার ৩৩ টন ধান উৎপাদন হয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এক যুগ আগেও এই অঞ্চলের প্রায় ৮০ শতাংশ জমিতে প্রচলিত ধানের চাষ হতো। কৃষি দপ্তরের প্রচেষ্টায় উচ্চ ফলনশীল জাতে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের। আর তাতেই বাড়ছে ফলন। কেবল উৎপাদনই নয়, কৃষকরা উচ্চ ফলনশীল জাতে গেলে বদলে যাবে শস্যবিন্যাস। এমনটিই মনে করেন বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও রাজশাহী কেন্দ্রের প্রধান ড. ফজলুল ইসলাম।

তিনি বলেন, এই অঞ্চলে আমন মৌসুমের জন্য উপযোগী স্বল্প জীবনকালের ধানের জাত ব্রি-৮৭। বীজতলায় বীজ বপন থেকে শুরু করে ফসল কেটে ঘরে তুলতে ১২০ থেকে ১২৫ দিন সময় লাগে। এই জাতের কাণ্ড শক্ত হওয়ায় গাছ হেলে পড়ে না। ফলে সহজেই যান্ত্রিক উপায়ে কাটা যায়। তাছাড়া কাণ্ড লম্বা হওয়ায় খড়ও পাওয়া যায় প্রচুর। ব্রি-৮৭ তুলে নির্বিঘ্নে সরিষা, ডাল ফসল অথবা আগাম আলু চাষ করা যায়। রবি ফসল তুলে সময়মতো বোরো ধানও চাষ করা যায়।

সময়মতো বোরো ধান চাষে আমনের জাত নির্বাচন জরুরি বলে মনে করেন এই কৃষি বিজ্ঞানী। তিনি বলেন, রাজশাহীজুড়ে সারা বছরই ধান পাকছে। আউশ ধান চাষের ক্ষেত্রে ব্রি ধান-৯৮ খুবই উপযোগী। এই ধানের ফলনও ভালো। স্বল্পমেয়াদি এই জাতের ধান তুলে আমন ধান চাষ করা যায়।

বোরো মৌসুমে ধানের জাত নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যেসব জমিতে চারটি ফসল ফলানোর পরিকল্পনা আছে সেখানে স্বল্পমেয়াদি বোরো জাত নির্বাচন করতে হবে। এমন পরিকল্পনা না থাকলে জমিতে দীর্ঘমেয়াদি বোরো জাত নির্বাচন করা যায়। তাতে ফলনও বেশি পাওয়া যাবে।

বোরোর জন্য নতুন জাত নির্বাচনে কৃষকদের পরামর্শ দেন এই বিজ্ঞানী। তিনি বলেন, নতুন উদ্ভাবিত ব্রি ধান-১০২ খুবই উপযোগী। এই ধানের ফলন ব্রি ধান-২৯ এর মতোই। ব্রি ধান-২৯ এর সপ্তাহখানেক আগেই পাকবে। এছাড়া ব্রি ধান-৯২ আছে। এটিও ব্রি ধান-২৯ এর মতো। বরেন্দ্র অঞ্চলের জন্য উপযোগী পানি সাশ্রয়ী এই জাতটি কৃষকদের মাঝে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে।

এই অঞ্চলের কৃষক বোরো মৌসুমে জিরা ধান চাষ করেন। এর বিকল্প উচ্চ ফলনশীল ব্রি ধান-১০০। এটি জিংক সমৃদ্ধ একটি জাত। এছাড়া জিং সমৃদ্ধ ব্রি ধান-৮৪ চাষ করা যায়। প্রোটিন সমৃদ্ধ এই ধানও জিরা ধানের মতো। এছাড়া ব্রি ধান-৮৮ ও ব্রি ধান-৮৯ চাষ করা যায় বোরো মৌসুমে।

ভারতীয় জাতের ধান চাষে কৃষকদের নিরুৎসাহিত করে এই বিজ্ঞানী বলেন, ভারতীয় ধানের জাতে রোগবালাই বেশি। সেই রোগবালাই দেশীয় উদ্ভাবিত জাতে চলে আসতে পারে। এজন্য আমরা কৃষকদের আমাদের উদ্ভাবিত উচ্চফলনশীল জাতের ধান চাষে উৎসাহিত করছি। ধানের বীজ উৎপাদন সহজ উল্লেখ করে কৃষকদের নিজের বীজ উৎপাদন করে সংরক্ষণের তাগিদ দেন এই কৃষি বিজ্ঞানী।

এই সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
কারিগরি সহযোগিতায়: সিসা হোস্ট