রেনেসাঁস নিউজ ডেস্ক : দেশের বিভিন্ন স্থানে বজ্রপাতে ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে নরসিংদীতে পৃথক বজ্রপাতে নারী ও শিশুসহ পাঁচজন, পাবনার ভাঙ্গুড়ায় দুই শ্রমিক, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পৃথক বজ্রপাতে দুজন, কুড়িগ্রামে দুই কৃষক, সুনামগঞ্জে স্কুলছাত্র, চাঁদপুর সদর উপজেলায় এক ব্যক্তি এবং শরীয়তপুর গোসাইরহাট উপজেলায় যুবকের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার (২৩ মে) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত এসব ঘটনা ঘটে। খবর বিভিন্ন ওয়েবসাইটের।

নরসিংদীতে পৃথক বজ্রপাতে নারী ও শিশুসহ পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল থেকে ভারী বর্ষণসহ অতিমাত্রায় বজ্রপাতে জেলার রায়পুরা, মনোহরদী, শিবপুর ও সদর উপজেলার পৃথক পৃথক বজ্রপাতে এসব ঘটনা ঘটে। মৃতরা হলেন-রায়পুরা উপজেলার ফকিরের চর গ্রামের মোমরাজ মিয়ার স্ত্রী সামসুন্নাহার (৪৫), একই উপজেলার গোপীনাথপুর গ্রামের ইসমাইল মিয়ার ছেলে জাবেদ মিয়া (১২), মনোহরদী উপজেলার পাতরদিয়া গ্রামের মৃত বাদল মিয়ার ছেলে প্রবাস ফেরত রায়হান মিয়া (২৫), নরসিংদী শহরের পশ্চিমকান্দা পাড়া মহল্লার সুকুমার রায়ের ছেলে শুপ্তকর (১৪) ও শিবপুরের দক্ষিণ সাদারচর গ্রামের খোরশেদ মিয়ার ছেলে খোকন মিয়া (৩০)।
স্বজন ও স্থানীয়রা জানান, বেলা ২টার দিকে রায়পুরা উপজেলার গোপীনাথপুরে বাড়ির সামনের মাঠে ফুটবল খেলছিল কয়েকজন কিশোর। এ সময় বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রপাত হলে জাবেদ মিয়া আহত হয়। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় একই গ্রামের আনোয়ার হোসেনের ছেলে শিমুল (১১), হোসেন মিয়ার ছেলে রিয়াজুল (১২) ও শাহ আলমের ছেলে হাসান (১১) আহত হয়।
এদিকে, দুপুরে মনোহরদী উপজেলার পাতরদিয়া গ্রামে বাড়ির পাশের ঈদগাঁহ মাঠে দাঁড়িয়ে ছিলেন কাতার থেকে ৩ মাসের ছুটিতে আসা রায়হান। এ সময় বৃষ্টি শুরু হলে বজ্রপাতে গুরুতর আহত হন তিনি। পরে উদ্ধার করে শিবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এছাড়া নরসিংদী শহরের পশ্চিমকান্দা পাড়া মহল্লার পুকুরে গোসল করতে গেলে বজ্রপাতে মারা যায় শহরের সাঠিরপাড়া কালিকুমার উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র শুপ্তকর (১৪)। এদিকে, মাঠে কাজ করা অবস্থায় বজ্রপাতে মারা যান শিবপুরের দক্ষিণ সাদারচর গ্রামের খোরশেদ মিয়ার ছেলে খোকন মিয়া (৩০)। এর আগে সকালে খড়ের গাদা তৈরি করার জন্য বাড়ির পাশের একটি জমি থেকে খড় আনতে যান ফকিরের চর গ্রামের সামসুন্নাহার। এ সময় বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।

পাবনা: ভাঙ্গুড়ায় মাঠে কাজ করা অবস্থায় বজ্রপাতে ২ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলার বেতুয়ান গ্রামে ধান কাটার সময় এ ঘটনা ঘটে। মারা যাওয়া ব্যক্তিরা হলেন- চাটমোহর উপজেলার ছাইকোলা গ্রামের বাসিন্দা শাকিল হোসেন (১৯) ও রমিজ উদ্দিন (৩০)। এ সময় বজ্রপাতে আরও অন্তত ১৩ জন আহত হন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া: নাসিরনগর ও বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় বজ্রপাতে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে সোনাতলা গ্রাম ও মানিকপুরে এই দুর্ঘটনা ঘটে। জানা যায়, মঙ্গলবার দুপুর ২টার দিকে নাসিরনগর উপজেলার গোয়ালনগর ইউনিয়নের সোনাতলা গ্রামে বজ্রপাতে মোজাম্মেল হক (৩২) নামের এক ইটভাটা শ্রমিকের মৃত্যু হয। মোজাম্মেল হক ওই গ্রামের মতি মিয়ার ছেলে।
এদিকে, বাঞ্ছারামপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এ কে মিত্র চাকমা জানান, দুপুরে উপজেলার মানিকপুরে জমিতে কাজ করার সময় বজ্রপাতে মনু মিয়া নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে।

কুড়িগ্রাম: উলিপুর ও চিলমারী উপজেলায় বজ্রপাতে দুই কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে মাঠে কাজ করতে গিয়ে তাদের মৃত্যু হয়। মৃতরা হলেন উলিপুর শাহাজালাল (৪৫) অপরজন চিলমারী উপজেলার রানীগঞ্জ ইউনিয়নের বাগানবাড়ী এলাকায় অবরু শেখ (৫০)।

সুনামগঞ্জ: নদীপথে ট্রলারে ধান পরিবহনের সময় বজ্রপাতে ওমর মিয়া (১৬) নামে এক স্কুলছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে ধর্মপাশা উপজেলার হরিপুর গ্রামের সীমের খাল (বরাইয়া) নদীতে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও তিনজন। ওমর মিয়া ধর্মপাশা উপজেলার বাদে হরিপুর গ্রামের মৃত আলিম উদ্দিনের ছেলে।

চাঁদপুর: সদর উপজেলায় বজ্রপাতে মো. হাছান মিজি (৪৫) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলার ৫ নং রামপুর ইউনিয়নের পশ্চিম ছোটসুন্দর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
হাছান মিজি ওই গ্রামের গফুর মিজি বাড়ির মৃত মো. কলোমদ্দিন মিজির ছেলে।

শরীয়তপুর: গোসাইরহাট উপজেলায় বজ্রপাতে মো. মাঈনুদ্দিন মান্দ (২৭) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলার কোদালপুর ইউনিয়নের রশিদ সরদার পাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। মাঈনুদ্দিন মান্দ ভেদরগঞ্জ উপজেলার ঢালী কান্দি গ্রামের মৃত আব্দুস সাত্তার মান্দের ছেলে।