দেশজুড়ে ডেস্ক: কুমিল্লার তিতাস উপজেলার গাজীপুর গ্রামের সদ্যপ্রয়াত এক ব্যক্তির ঘরে প্রায় আড়াই কোটি টাকা পাওয়ার বিষয়টি তদন্তে কমিটি করেছে প্রশাসন। তিতাস উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ টি এম মোর্শেদ জানান, এই অর্থের প্রকৃত উৎস জানতে বৃহস্পতিবার উপজেলা প্রশাসন চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
তিন কার্যদিবস পর তদন্ত কমিটিকে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে বলে ইউএনও মোর্শেদ জানান। চিরকুমার এই ব্যক্তির নাম আমির হোসেন মুন্সী ওরফে ‘বিষ পাগলা’। কেউ কেউ তাকে ‘বিষা পাগলা’ বলেও ডাকতেন। বুধবার তার ঘরে প্রায় আড়াই কোটি টাকা, বিদেশি মুদ্রা ও স্বর্ণালঙ্কার পাওয়া যায়।
এলাকার লোকজন বিষ পাগলাকে ‘ফকির’ বা আধ্যাত্মিক ব্যক্তি হিসেবে জানে। পরিবারের দাবি, ভক্তরাই তাকে এসব টাকা ও স্বর্ণালংকার উপহার দিয়েছেন। ইউএনও এ টি এম মোর্শেদ বলেন, বিষ পাগলার আয়ের উৎস সম্পর্কে জানতে কিংবা কোত্থেকে এত টাকা তার ঘরে জমা হলো বিষয়গুলোকে স্পষ্ট করতে চার সদস্যের একটি তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে। “বৃহস্পতিবারসহ আগামী তিন কার্যদিবসে অর্থাৎ সোমবার পর্যন্ত তদন্ত চলবে। মঙ্গলবার তদন্ত কমিটি আমাকে রিপোর্ট দেবে।”
তিনি জানান, একজন গেজেটেড অফিসার, তিতাস থানার একজন কর্মকর্তা এবং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানসহ ৪ জন আছেন কমিটিতে। তারা এরই মধ্যে কাজ শুরু করে দিয়েছেন।
গত ৮ জুলাই গ্রামের মৃত নসু মুন্সীর ছেলে মো. আমির হোসেন মুন্সী ওরফে বিষ পাগলা ৫৫ বছর বয়সে স্বাভাবিকভাবে মারা যান। অবিবাহিত জীবনে বিষ পাগলা একাই একটি ঘরে বসবাস করে আসছিলেন। ঈদের কারণে তাৎক্ষণিক তার বসবাসের ঘরে কেউ প্রবেশ না করলেও ঈদের পর মঙ্গলবার তার আত্মীয়-স্বজন ঘরটি পরিষ্কার করতে যান। ঘর পরিষ্কারের এক পর্যায়ে আলমারি খুললে তাতে সাজানো টাকার বান্ডিল দেখতে পান তারা। বিষয়টি তারা তাৎক্ষণিক এলাকার গণ্যমান্য ও জনপ্রতিনিধিদের জানান। পরে থানা পুলিশের সহযোগিতায় মঙ্গলবার রাতে ঘরটি তালাবদ্ধ করে রাখা হয়।
বুধবার তিতাস থানা পুলিশ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে ওই টাকা গণনা করা হয়। স্থানীয় বলরামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. নূরনবী জানান, বিষ পাগলার ঘর থেকে দুই কোটি ৪৫ লাখ নগদ টাকাসহ প্রায় তিন লাখ টাকার বিভিন্ন দেশের মুদ্রা ও স্বর্ণাংকার পাওয়া গেছে। টাকা পাওয়ার পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয়দের সামনেই বিষ পাগলার দুই ভাই, এক বোন ও ভাগনি তাসলিমার কাছ থেকে স্ট্যাম্প কাগজে স্বাক্ষর রেখে এই টাকা হস্তান্তর করা হয়েছে। তারা এই টাকা গৌরীপুর ব্র্যাক ব্যাংকে যৌথ হিসাব খুলে জমা দিয়েছেন।
Leave a Reply