জাতীয় ডেস্ক: আগামী নির্বাচনকেন্দ্রিক বিদেশি কূটনীতিকদের আনাগোনা শুরু হয়েছে। বিভিন্ন বিদেশি শক্তি চাপ সৃষ্টি করতে পারে এমনটা অনুমান করছেন। তবে যত চাপই আসুক জনগণের স্বার্থে কাজ করে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার বিকেলে গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
কাতার সফর সম্পর্কে জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। ড. ইউনূসসহ বিভিন্ন ইস্যুতে বিদেশিদের তৎপরতা শুরু হয়েছে। এ ব্যাপারে সরকারপ্রধান কোনো চাপ অনুভব করছেন কি না সাংবাদিক রফিকুল ইসলাম রনির এমন প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এমন কোনো চাপ নাই, যেটা শেখ হাসিনাকে দিতে পারে, এটা মাথায় রাখতে হবে। কারণ, আমার শক্তি একমাত্র আমার জনগণ; আর উপরে আল্লাহ আছে; আর আমার বাবার আশির্বাদের হাত আমার মাথায় আছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কাজেই, কে কী চাপ দিল, না দিল- এতে কিছু আমাদের আসে যায় না। জনগণের স্বার্থে যেটা করার আমরা সেটাই করব। জনগণের কল্যাণে যেই কাজ করার সেটাই করব।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, এই রকম বহু চাপতো ছিল, পদ্মা সেতুর আগেতো কম চাপ দেওয়া হয়নি। কোনো একটা দেশের একেবারে সেই অ্যাম্বাসেডর থেকে শুরু করে, তাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী থেকে শুরু করে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে টেলিফোনের উপর টেলিফোন, হেনতেন।
এ সময় ড. ইউনূসের সমালোচনা করে তিনি বলেন, কেন? একটা ভদ্রলোক একটি ব্যাংকে এমডি, তাকে এমডি পদে রাখতে হবে। এমডি পদে কী মধু, তাতো আমি জানি না। আইনে আছে ৬০ বছর, হয়ে গেছে ৭০ বছর বয়স। তারপরেও এমডি পদে থাকতে হবে। একটাই হয় এমডি পদে থাকবে বোধহয় মানি লন্ডারিং করা যায়, এইতো সুবিধা। পয়সা বানানো যায়, পয়সা মারা যায়, গরীবের রক্ত চুষে খাওয়া যায়।
শেখ হাসিনা বলেন, সেই চাপও কিন্তু শেখ হাসিনা সহ্য করে চলে আসছে। তারপর নিজের পয়সায় পদ্মা সেতু বানায়া তাদের দেখালাম, ওই চাপে আমাদের কিছু আসে যায় না। ঠিক আছে? আর কিছু লাগবে?’
নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ করতে তারা উন্মুখ
আগামী নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ করতে দেশি-বিদেশি শক্তি উন্মুক্ত বলে জানান শেখ হাসিনা। বলেন, এই নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য অনেক আন্তর্জাতিক ও দেশীয় এজেন্সি উন্মুখ হয়ে আছে। ৪০ জনের নামে (ওয়াশিংটন পোস্টের বিজ্ঞাপন) যেটা এসেছে, ওটার পেছনেও কিছু অ্যাম্বিশন আছে। এতে কোনো সন্দেহ নেই। যাদের ইচ্ছা, তারা জনগণের কাছে যাবে। নির্বাচন যাতে অবাধ-সুষ্ঠু হয়, তার জন্য নির্বাচনি প্রক্রিয়ায় সংশোধনী বা সংস্কার আনা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০১ সালের নির্বাচনের পর যে সন্ত্রাস, সংঘাত, মানুষের ওপর অত্যাচার-নির্যাতন, সেটি যদি ভেবে দেখেন…। ২০০৬ সালের পর ভোটারবিহীন ভোটার তালিকা, ২০০৭-এর নির্বাচন…। এই ঘটনাগুলোর যাতে আর পুনরাবৃত্তি না ঘটে, তার জন্যই আমরা এই সংস্কারগুলো করে দিয়েছি। এখন জনগণের ওপর নির্ভর করে যে তারা কীভাবে চায়? নির্বাচনের প্রস্তুতি আমাদের সবসময়ই আছে, জনগণ যেন ভোট দিতে পারে।
সাম্প্রতিক কয়েকটি নির্বাচনের উদাহরণ তুলে ধরে সরকারপ্রধান বলেন, মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে ভোট দিতে পেরেছে। তারা নির্বিঘ্নে ভোট দিয়ে গেছে। এই ভোটগুলো নিয়ে তো কেউ একটা কথাও বলতে পারেনি। সরকারে থাকলেও যে নির্বাচন সবসময় নির্বিঘ্ন হতে পারে, শান্তিপূর্ণ হতে পারে, অবাধ নিরপেক্ষ হতে পারে—সেটা তো আমরা প্রমাণ করেছি। আর কী প্রমাণ করতে হবে, সেটাই আমার প্রশ্ন।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, জনগণের ভোটের অধিকার নিয়ে আমরা সংগ্রাম করেছি। আমরা জনগণের ভোটের অধিকার জনগণের হাতে ফিরিয়ে দিয়েছি। এখন জনগণের এটা হচ্ছে দায়িত্ব।
Leave a Reply