স্টাফ রিপোর্টার : সবজির জমিতে বৃষ্টির পানি জলাবদ্ধতা তৈরি থেকে বাঁচতে অনেক কৃষক এবার নতুন পদ্ধতি বা মালচিং পদ্ধতিতে সবজি চাষ করছেন রাজশাহীর কৃষকরা। জেলার গোদাগাড়ী, পবা, তানোর ও চারঘাটসহ বিভিন্ন এলাকায় কৃষকরা নতুন পদ্ধতিতে শীতের সবজি চাষ করছেন।
কৃষকরা বলছেন, মালচিং মূলত চীন ও জাপানের বিষমুক্ত সবজি চাষের একটি পরিবেশবান্ধব পদ্ধতি। বিভিন্ন ধরনের বস্তু দিয়ে যখন গাছপালার গোড়া, সবজি ক্ষেত ও বাগানের বেডের জমি বিশেষ পদ্ধতিতে ঢেকে দেয়া হয় তখন তাকে বলে মালচ। আর এ পদ্ধতিকে বলে মালচিং। চাষে বাণিজ্য ও আধুনিকীকরণ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্লাস্টিক মালচিংয়ের ব্যবহার জনপ্রিয় হচ্ছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর জানায়, রাজশাহীতে ১৫ হাজার ৬১৮ হেক্টর জমিতে সবজি চাষ করা হয়। বিগত আট বছরে জেলায় সবজি চাষ বেড়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ লাখ ২৬ হাজার ৪১৬ মেট্রিকটন। এসব সবজি রাজধানীসহ দেশের অধিকাংশ জায়গায় রফতানি করা হয়।
চারাগুলোতে পানির হাত থেকে বাঁচাতে জমিতে বিছিয়ে দেয়া হয়েছে পলিথিন। নিদিষ্ট দুরত্বে সেই পলিথিনের ফুটো দিয়েই বেগুনের চারাগুলো বের করা হয়েছে। চারাগুলোকে বৃষ্টির পানি থেকে রক্ষা করতে এ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
গোদাগাড়ী এলাকায় অনেক চাষি এবারে এ পদ্ধতি অবলম্বন করেছেন। এ অঞ্চলে অনেক পরিবার শুধু সবজি চাষ করেই জীবিকা নির্বাহ করে। এখানকার কয়েকজন সবজি চাষি জানান, প্রতি বছর লাগাতার বৃষ্টি ও জলাবদ্ধতায় সবজি ক্ষেতের ব্যাপক ক্ষতি হয়। বর্ষার পানির কারণে অনেক চাষি ক্ষতির মুখে পড়েন। সে জন্য এবার তারা এ পদ্ধতিতে বেগুন চারা লাগিয়েছেন।
গোদাগাড়ীর সবজি চাষি আমজাদ হোসেন জানান, প্রথমে বেগুনের সারি করা হয়। এরপরে জমিতে পলিথিন বিছিয়ে দেয়া হয়। সেই পলিথিন ফুটো করে নির্দিষ্ট দুরে দুরে বেগুনের চারা লাগানো হয়। এতে চারার গোড়াতে বৃষ্টির পানি জমে না। পলিথিনের উপর দিয়ে বৃষ্টির পানি গড়িয়ে নেমে যায়। আরেক কৃষক শফিকুল ইসলাম জানান, এবারেই তারা নতুন এ পদ্ধতিতে বেগুন চাষ করছেন। বর্ষা পুরো নামেনি। তবে যেটুকু বৃষ্টি হয়েছে তাকে কোন ক্ষতি হয়নি বেগুন গাছের।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক মো: মোজদার হোসেন জানান, রাজশাহীতে মালচিং পদ্ধতিতে বেগুন, টমেটো, কাঁচামরিচসহ বেশ কয়েকটি সবজি চাষ করা হচ্ছে। এ পদ্ধতি মূলত ঘাস ঠেকাতে করা হয়। খরচ বাঁচাতে মালচিং করছেন চাষিরা।
Leave a Reply