স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) চারুকলা বিভাগের এক ছাত্রকে অপহরণের পর মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সেইসঙ্গে অপহৃত ওই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রকে উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার হওয়া রাতুল কুমার বর্মণ গোদাগাড়ী উপজেলার চান্দলাই গ্রামের মৃত অসীম কুমার বর্মণের ছেলে। তিনি রাবির চারুকলা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী।
গ্রেফতাররা হলেন, মহানগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানার রানীনগর হিন্দুপাড়া এলাকার ইন্দ্রজিৎ সরকারের ছেলে পবন সরকার উদয় (১৯), রাজপাড়া থানার হড়গ্রাম বাজার এলাকার মৃত সাইদুল ইসলামের ছেলে দাউদ ইব্রাহিম সাফি (২২), একই এলাকার মৃত সুরে জামাল শেখের ছেলে পলাশ কবির (২৬), কাশিয়াডাঙ্গা থানার হড়গ্রাম পালপাড়ার হরেন্দ্রনাথ পালের ছেলে প্রবীণ পাল রুদ্র (২০) ও একই এলাকার শামসুর রহমান বাদলের ছেলে ওয়াহিদুর রহমান নুর (২০)। কাশিয়াডাঙ্গা থানার হড়গ্রাম কোর্টস্টেশন মোড়ের জামিল চত্বর এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
জানা যায়, রাতুল বর্মণের সঙ্গে আসামি পবন সরকারের মোবাইলফোনে পরিচয় হয়। সেই সূত্র ধরে শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় পবন সরকার মোবাইলফোনে রাতুলকে হড়গ্রাম কোর্টস্টেশন মোড়ের জামিল চত্বরে আসতে বলেন। রাতুল সেখানে গিয়ে তার ছোট ভাই দিবাকর বর্মণের মেসে থাকা নিয়ে পবনের সঙ্গে কথা বলেন। কথা শেষ করে রাতুল সেখান থেকে যেতে চাইলে পবনের অপর সহযোগী দাউদ ইব্রাহিম ও পলাশ তাকে অপহরণ করে হড়গ্রাম বাজারে একটি বিল্ডিংয়ের নিচতলায় আটকে মারধর করেন।
রাত ৯টার দিকে আসামিরা রাতুলের মোবাইলফোন থেকে তার মায়ের ফোনে কল করে নিজেদের পুলিশ সদস্য পরিচয় দিয়ে ৪০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। পরে রাতুলের মা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ১০ হাজার টাকা পাঠান। আসামিরা অবশিষ্ট টাকার জন্য রাতুলকে মেরে জখম করেন। রাতুল আসামিদের সঙ্গে ধ্বস্তাধস্তি করে একপর্যায়ে ঘরের বাইরে এসে চিৎকার শুরু করেন। এসময় আসামিরা রাতুলকে আবার ধরে ঘরে নিয়ে আটক রেখে মারধর করতে থাকেন।
তাদের এই ধস্তাধস্তির শব্দ শুনে স্থানীয় এক বাসিন্দা পুলিশকে বিষয়টি জানান। এরই সূত্র ধরে কাশিয়াডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মশিউর রহমানের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল রাত সাড়ে ১০টার দিকে ঘটনাস্থলে অভিযান চালিয়ে পাঁচ অপহরণকারীকে গ্রেফতার করেন এবং রাতুলকে উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে কাশিয়াডাঙ্গা থানার ওসি বলেন, এ ঘটনায় ভুক্তভোগী রাতুল ওই পাঁচজনের বিরুদ্ধে অপহরণ, মারধর ও টাকা আদায়ের অভিযোগে মামলা করেছেন। পরে গ্রেফতারদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
Leave a Reply