রেনেসাঁস নিউজ ডেস্ক : রাজধানীর ঢাকা সিটি কলেজ ও ধানমন্ডি আইডিয়াল কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের মধ্যে পুলিশের নিপীড়নের শিকার হয়েছেন খলিলুর রহমান স্টালিন নামে এক সাংবাদিক।
রবিবার দুপুর ১২টার দিকে দুই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের মধ্যে এ সংঘর্ষের কারণে পুরো এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হওয়ায় এক ঘণ্টা পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ।
শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের সময় পুলিশের মারধরের ছবি ও ভিডিও ধারণ করতে গেলে অনলাইন নিউজ পোর্টাল ঢাকা মেইলের স্টাফ রিপোর্টার খলিলুর রহমান স্টালিনকে হেনস্তা করে পুলিশ। এসময় জামা টেনে ধরাসহ মোবাইল ফোন ও পরিচয়পত্র ছিনিয়ে নেওয়া হয়। পরে ঘটনাস্থলের আশপাশে থাকা কয়েকজন তাকে উদ্ধার করেন।
ধানমন্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকরাম আলী মিয়া বলেন, সিটি কলেজ ও আইডিয়াল কলেজের মধ্যে প্রায়ই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে থাকে। আজও দুই কলেজের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে ও বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীকে থানায় আটক করে তাদের স্বজন ও কলেজ সংশ্লিষ্টদের খবর দেওয়া হয়। জানা গেছে, তাদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ না পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে, নয়তো ছেড়ে দেওয়া হবে।
পুলিশের রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার শহীদুল্লাহ বলেন, সিটি কলেজের শিক্ষার্থীরা আইডিয়াল কলেজের ফটকে গিয়ে আইডিয়ালের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে ‘তোরা মুরগি’ ও ‘সাহস থাকলে বের হ’ এমন মন্তব্য করেন। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই দুই কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে।
সাংবাদিক খলিলুর রহমান স্টালিনকে হেনস্তা
স্টালিনকে পুলিশ কর্তৃক লাঞ্ছনার বিষয়ে প্রত্যক্ষদর্শী সাংবাদিক লতিফ রানা বলেন, স্টালিন পিবিআইয়ের সংবাদ সম্মেলনে যাচ্ছিলেন। ওই সময় পুলিশ কয়েকজন ছাত্রকে মারধর করে গাড়িতে তোলেন। এসময় পুরো ঘটনা ভিডিও ধারন করতে গেলে এক পুলিশ সদস্য তার আইডি কার্ড ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেন।
তিনি আরও বলেন, স্টালিন নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিলেও ওই পুলিশ সদস্য কোনো কথার কর্ণপাত না করে তাকে গাড়িতে তোলেন। স্টালিনকে গাড়িতে তোলার সময় সংবাদ সম্মেলনে যাওয়া তিনি নিজে (লতিফ রানা) ও চ্যানেল আইয়ের বিশেষ প্রতিনিধি এনামুল কবীর রূপম পুলিশকে বাধা দেন।
এদিকে ভুক্তভোগী সাংবাদিক স্টালিন জানান, সিটি কলেজ ও ধানমন্ডি কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের সূত্র ধরে পুলিশ কিছু শিক্ষার্থীকে মারধর করে গাড়িতে তুলছিলেন। এ সময় আমি পিবিআইয়ের সংবাদ সম্মেলনে যাচ্ছিলাম। ছাত্রদের মারধর করে গাড়িতে তোলার দৃশ্য দেখে ছবি ও ভিডিও ধারণ করার চেষ্টা করলে কয়েকজন পুলিশ আমাকে বাধা দেন ও মারধর করেন। এরপর তারা আমার আইডি কার্ড ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেন। এসময় নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দেওয়ার চেষ্টা করলেও সেই পুলিশ সদস্যরা কোনো কথার কর্ণপাত না করে মারধরের পর জোর করে আমাকে গাড়িতে তোলা হয়। ওই সময় দুই সিনিয়র সাংবাদিকের হস্তক্ষেপে আমি মুক্ত হই।
ক্র্যাবের নিন্দা
দায়িত্ব পালনের সময় সাংবাদিককে হেনস্তার ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব)। সংগঠনের নেতারা এ ঘটনায় জড়িত পুলিশ সদস্যদের চিহ্নিত করে যথাযথ শাস্তির দাবিও করেন।
Leave a Reply