1. admin@renesus.news : admin :
  2. Biddut@renesus.news : Biddut :
  3. renesus.news@gmail.com : renesus :
  4. info@renesus.news : shamaun :
বুধবার, ০৭ মে ২০২৫, ০৮:০৮ পূর্বাহ্ন

‘স্বাস্থ্যখাত উন্নয়নে বাজেট সহায়তা বাড়ানো জরুরি’

স্টাফ রিপোর্টার
  • প্রকাশের সময় : শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪
  • ৮১ বার পড়া হয়েছে

ঢাকা চেম্বারের সভাপতি আশরাফ আহমেদ বলেছেন, দেশের স্বাস্থ্যখাত উন্নয়নে বাজেট সহায়তা বাড়ানো জরুরি। সেইসঙ্গে আন্তর্জাতিক হাসপাতলগুলোর চেইন কার্যক্রম বাংলাদেশে চালুকরণ, বিদেশী ডাক্তার ও নার্সদের বাংলাদেশে কার্যক্রম পরিচালনার রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া সহজীকরণসহ স্বাস্থ্যখাতের সকল ধরনের লাইসেন্স প্রাপ্তি ও নবায়নের প্রক্রিয়াগত জটিলতা নিরসন করা জরুরি।

শনিবার ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত “স্বাস্থ্য খাতে বিদেশমুখিতা কমাতে দেশীয় সক্ষমতা বৃদ্ধি” বিষয়ক সেমিনারে স্বাগত বক্তব্যে এসব কথা বলেন ডিসিসিআই’র সভাপতি আশরাফ আহমেদ। সেমিনারটি ডিসিসিআইয়ের মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়।

উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতি’র সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক এ কে খান আজাদ, বাংলাদেশ মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্টার ডা. মো. লিয়াকত হোসাইন, বাংলাদেশ প্রাইভেট ক্লিনিক ডায়াগনস্টিক ওনার্স এসোসিয়েশনের ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি এবং সমরিতা হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. এ বি এম হারুন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্সটিটিউট অব হেলথ ইকোনোমিক্সের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. সৈয়দ আব্দুল হামিদ, বিএসএমএমইউ’র প্রসূতি ও স্ত্রীরোধবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ডা. রেজাউল করিম কাজল, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ও বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিসিয়ান্স অ্যান্ড সার্জন্স’র সেক্রেটারি ডা. আবুল বাসার মো: জামাল এবং বাংলাদেশ সোসাইটি অব ইমার্জেন্সি মেডিসিনের সেক্রেটারি জেনারেল ডা. মীর সাদউদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।

ডিসিসিআই’র সভাপতি উল্লেখ করেন, ডব্লিউটিও’র তথ্য মতে বাংলাদেশের ৪৯ শতাংশ মানুষই মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা পায় না। সেই সঙ্গে স্থানীয় সেবায় প্রয়োজনীয় আন্তর্জাতিক মান না থাকায় বিদেশে স্বাস্থ্য সেবা নেওয়ার প্রবণতা প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এখাতের উন্নয়নে বিশেষ করে উন্নত অবকাঠামো ও আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিতকরণ, ডিজিটাল ব্যবস্থা প্রবর্তন, দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে বেসরকারিখাতে হাসপাতাল কার্যক্রম চালু উৎসাহিতকরণে কর অব্যাহতি সুবিধা প্রদানের উপর জোর দেন ডিসিসিআই সভাপতি।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডিসিসিআই ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি মালিক তালহা ইসমাইল বারী। প্রতিবেদন

উপস্থাপনকালে তিনি উল্লেখ করেন, স্বাস্থ্য খাতে বাংলাদেশে মাথাপিছু ব্যয় করা হয় ১১০ মার্কিন ডলার। যা বাংলাদেশী টাকায় ১৩ হাজার ২০০ টাকা (বর্তমান ডলার মূল্য ১২০ টাকা ধরে)। যেখানে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশে ব্যয় হয় ৪০১ মার্কিন ডলার। যা বাংলাদেশী টাকায় ৪৮ হাজার ১২০ টাকা। এছাড়া ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ ছিল ৩০ হাজার ১২৫ কোটি টাকা। যা মোট বাজেটের মাত্র ৩.৭৮ শতাংশ।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনায় মালিক তালহা ইসমাইল বারী বলেন জানান, প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবার অপ্রতুলতার কারণে দেশের একটি বৃহৎ জনগোষ্ঠী বিশ্বের অন্যান্য দেশের সেবা নিয়ে থাকে এবং ২০১২ সালে বিদেশে স্বাস্থ্য সেবা নেওয়ায় বাংলাদেশীদের ব্যয়ের পরিমাণ ছিল প্রায় ৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। যা বাংলাদেশী টাকায় ৪৮ হাজার কোটি টাকা।

প্রতিবেদনে তিনি উল্লেখ করেন, বর্তমানে দেশে ৫ হাজার ৪৬১ বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিক রয়েছে। যার মধ্যে ১৮১০টি ঢাকা বিভাগে অবস্থিত, পাশাপাশি ৩৬টি স্পেশালাইজড হাসপাতালের মধ্যে ১৯টি ঢাকায় অবস্থিত হওয়ায় দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে বসবাসকারী লোকজন উন্নত স্বাস্থ্য সেবা হতে বঞ্চিত হচ্ছে।

তিনি বলেন, প্রতিনিয়ত ঢাকার উপর চাপ বাড়ছে। উন্নত স্বাস্থ্য সেবার প্রতিবন্ধকতা হিসেবে অবকাঠমোর স্বল্পতা, দক্ষ ডাক্তার, নার্স ও টেকনিশিয়ান-এর অভাব, সরকারী হাসপাতলে সেবা প্রাপ্তিতে দীর্ঘসূত্রিতা, উন্নত সেবার জন্য ইন্স্যুরেন্স কভারেজের অনুপস্থিতি প্রভৃতি অন্যতম কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন।
বিদ্যমান অবস্থা উত্তরণে স্বাস্থ্য খাতের রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়ার সহজীকরণ, সরকারিভাবে সকলের জন্য স্বাস্থ্য সেবা ইন্স্যুরেন্সের আওতায় নিয়ে আসা, স্বাস্থ্য খাতে বাজেট সহায়তা ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি, পিপিপি মডেলে ঢাকায় আন্তর্জাতিক হাসপাতালসমূহের কার্যক্রম শুরু, সহায়ক নীতি সহায়তা প্রদানের উপর জোরারোপ করেন মালিক তালহা ইসমাইল বারী।

সেমিনারে জাতীয় অধ্যাপক এ কে খান আজাদ বলেন, পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা স্বল্পতা, চিকিৎসা ব্যবস্থায় আস্থার স্বল্পতা, সর্বোপরি কমফোর্টের অভাবে অসংখ্য লোক দেশের বাইরে চিকিৎসা সেবা নিচ্ছে, এগুলো যথাযথভাবে চিহ্নিতকরণ ও সমাধানের মাধ্যমে রোগীদের বিদেশমুখীতা হ্রাস করা সম্ভব। দেশে পরিচালিত ল্যবারেটরিসমূহের মান উন্নয়নের উপর তিনি জোরারোপ করেন।

তিনি উল্লেখ করেন, যেহেত প্রযুক্তির ক্ষেত্রে চিকিৎসা বিজ্ঞান একটি সর্বদা পরিবর্তনশীল প্রক্রিয়া, এমতাবস্থায় বর্তমানে আমরা যা আমরা প্রত্যক্ষ করছি আগামী ২৫ বছর পর এক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তন আসবে, তাই সেরা প্রযুক্তিগত অগ্রগতি গ্রহণ করার জন্য আমাদের একটি সঠিক পাঠ্যক্রম থাকা জরুরী। দেশে পরিচালিত ল্যাবরেটরিগুলোর মান উন্নয়ন, বাজেট সহায়তা বাড়ানোর মাধ্যমে চিকিৎসাশাস্ত্রের গবেষণা কার্যক্রম বৃদ্ধি ও বাংলাদেশ মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিল-এর শক্তিশালীকরনের উপর তিনি জোরারোপ করেন।
বাংলাদেশ মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্টার ডা. মো. লিয়াকত হোসাইন বলেন, বিদ্যমান সমাধানে প্রয়োজনীয় পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমরা একটি কার্যকর স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিশ্চিতকরতে পারি, যার মাধ্যমে বিদেশ যাওয়ার প্রবনতা কমবে পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চয়ের মাধ্যমে রিজার্ভ বৃদ্ধি সম্ভব। উন্নত সেবা প্রদানে রোগীদের প্রতি ডাক্তার ও স্বাস্থ্যকর্মীদের মানসিকতা পরিবর্তন একান্ত অপরিহার্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশীয় ডাক্তার ও নার্সদের দক্ষতা উন্নয়নের আন্তর্জাতিকমানের প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউট স্থাপনের কোন বিকল্প নেই।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্সটিটিউট অব হেলথ ইকোনোমিক্সের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. সৈয়দ আব্দুল হামিদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অতিদ্রুত একটি মেডিকেল অ্যাক্রিডিটেশন কাউন্সিল প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব করেন। এছাড়াও তিনি শুধুমাত্র স্বাস্থ্য প্রশাসনকে দক্ষতার সাথে পরিচালনার জন্য সিভিল সার্ভিস থেকে বাদ দিয়ে পৃথক স্বাস্থ্য ক্যাডারের প্রস্তাব করেন পাশাপাশি এ খাতকে আরও কার্যকর করতে জুডিশিয়ারি সার্ভিস কমিশনের মতো স্বাস্থ্যসেবা কমিশন গঠনের উপর জোরারোপ করেন। তিনি উল্লেখ করেন, আমাদের স্বাস্থ্য খাতে বিদ্যমান সমস্যাসমূহ আকাশ সমাধান, যা নিরসনে দেশের স্বাস্থ্য সেবা খাতের বিদ্যমান ব্যবস্থাপনার আমূল সংষ্কারের কোন বিকল্প নেই। জনগনের প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা পেতে ডাক্তার ও হাসাপাতাল নির্বাচনে প্রয়োজনীয় তথ্যসমৃদ্ধ অ্যাপস্ চালুর উপর তিনি জোরারোপ করেন।

বিএসএমএমইউ-এর প্রসূতি ও স্ত্রীরোধবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ডা. রেজাউল করিম কাজল বলেন, আস্থা এই সেক্টরের উন্নয়নের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, তাই আমাদের স্বাস্থ্যসেবাকে স্বাস্থ্যসেবা পর্যটনে রূপান্তর করতে হবে। বৃহৎ জনগোষ্ঠীকে উন্নত স্বাস্থ্য সেবা প্রদানের লক্ষ্যে গ্রামীণ পর্যায়ে আরও বেশি মানের হাসপাতাল স্থাপন করা উচিত বলে তিনি মত প্রকাশ করেন।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক এবং বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিসিয়ান্স অ্যান্ড সার্জন্স-এর সেক্রেটারি ডা. আবুল বাসার মো: জামাল বলেন, বাংলাদেশ এখন ওষুধ উৎপাদনকারী দেশ এবং আমরা বিভিন্ন দেশে রপ্তানিও করি, কিন্তু চিকিৎসা যন্ত্র উৎপাদনে আমরা এখনো পিছিয়ে আছি, এমতাবস্থায় এ খাতে আরও ভালো করতে হলে দক্ষ জনশক্তি ও প্রশিক্ষণের ওপর জোর দিতে হবে। তিনি জানান, বাংলাদেশে ১ লাখ ৩৪ হাজার চিকিৎসক রয়েছে।  এর মধ্যে মাত্র ৩৩ হাজার সরকারি চিকিৎসক। তবে এটা সন্তোষজনক। এখানে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল কলেজে ১০ হাজারের বেশি বিদেশি মেডিকেল শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছে।

বাংলাদেশ সোসাইটি অব ইমার্জেন্সি মেডিসিন-এর সেক্রেটারি জেনারেল ডা. মীর সাদউদ্দিন আহমেদ বলেন, কোভিডের সময় কেউ চিকিৎসা নিতে বিদেশে যায়নি। মহামারীর সেই সময়ে আমরা পরিস্থিতি সামলাতে পেরেছি, এটা স্বাস্থ্যসেবা খাতে আমাদের সক্ষমতা প্রতিফলিত করে। তিনি বিশ্বমানের ডাক্তারদের সাথে জরুরী যত্নের প্ল্যাটফর্ম বাড়াতে এবং আস্থা তৈরির সুবিধার উপর জোরারোপ করেন।

এই সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
কারিগরি সহযোগিতায়: সিসা হোস্ট