স্টাফ রিপোর্টার: আন্তর্জাতিক ধান গবেষনা ইন্সটিটিউট ইরি’র সেচ পদ্ধতিতে ধান উৎপাদনে কমছে কৃষকের সেচ খরচ। বিঘায় সেচ খরচ কমছে হাজার থেকে ১৫’শ টাকা। গেল ৮ বছর জুড়ে করা এ পরীক্ষার সুবিধা বরেন্দ্র জুড়ে ছড়িয়ে দিতে কাজ করছে কৃষি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো। এতে প্রশিক্ষণ, সচেতনতা তৈরীসহ কৃষককে বিভিন্নভাবে সাহায়তার কথা জানিয়েছে ইরি।
বৃহস্পতিবার (৯ মে) রাজশাহীর কাজী হাটায় গ্র্যন্ড রিভারভিউতে ইরির আয়োজনে কর্মশালায় এসব তথ্য জানান বক্তারা।
এসময় প্রধান অতিথি ছিলেন বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) চেয়ারম্যান বেগম আক্তার জাহান। উপস্থিত ছিলেন আমেরিকার টাফস্ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক উজ্জান চক্রবর্তী। কর্মশায় বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক সাবিনা বেগম।
কর্মশালায় বক্তারা জানান, রুক্ষ শুষ্ক বরেন্দ্র অঞ্চল বছর জুড়ে আবৃত থাকে সবুজ ফসলে। এসব ফসলের অধিকাংশই ধান। বরেন্দ্র জুড়ে মৌসুমে খরিপ-১, ২ আর বোর ধানের চাষে বছর জুড়ে ব্যস্ত থাকে এখানকার কৃষক। তাতে শীত, খরা বা বর্ষা ফসল উৎপাদনে, অধিকাংশ কৃষক নির্ভরশীল ভূ-গর্ভের পানির ওপর।
পানি গবেষণা প্রতিষ্ঠান ওয়ারপো বলছে বরেন্দ্র থেকে ক্রমাগত পানি উত্তলনে, গেল দুই দশকে পানির স্তর নেমেছে ১১৩ ফুট নিচে। এ অবস্থায় স্বল্প পানি ব্যবহার করে কৃষককে ধান উৎপাদনে, পাইপের মাধ্যমে মাঠের আদ্রতা পর্যবেক্ষণ “এডব্লিউডি” বা “সেচ স্কেল” পদ্ধতি দিয়ে সহায়তা করছে আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা কেন্দ্র-ইরি। গেল ৮ বছরে শতাধিক কৃষকের জমিতে এ পদ্ধতীর পরীক্ষা চলেছে। সে গবেষণার ফলাফল জানাতেই কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্ত, বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয় কতৃপক্ষ, ধান গবেষণা প্রতিষ্ঠনসহ সংশ্লিষ্ট সকল প্রতিষ্ঠানের এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
তার ফলাফলে ইরি বলছে, এ সেচ পদ্ধতিতে পূর্বে ১ কেজি ধান উৎপাদনে সাড়ে তিন হাজার লিটার পানির স্থানে এখন কৃষকের প্রয়োজন হচ্ছে ১২’শ থেকে ১৫’শ লিটার। সাথে কমছে ধান উৎপাদনে পাঁচটি সেচের খরচ যার পরিমান বিঘায় অন্তত দেড় হাজার টাকা। তবে ফসলের উৎপাদনে “সেচ স্কেল” পদ্ধতি অসরণে পিছিয়ে বরেন্দ্র এলাকার অধিকাংশ কৃষক।
বৈঠকে কৃষি সম্প্রসারণের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা বলেন, এতে ধানখেতে আগাছা সৃষ্টি ও ব্যবস্থাপনায় সময় ব্যায় এবং উৎপাদন কমতির শঙ্কা করে কৃষক। তবে কৃষকের এ অজ্ঞতা কাটিয়ে তুলতে আশাবাদি জেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা।
আন্তর্জাতিক ধান গবেষনা কেন্দ্র ইরির এই বাংলাদেশ প্রতিনিধি বলছেন, এই গবেষনা বা সেচ পদ্ধতি সম্পর্কে অনেকেই সচেতন নয়। তবে নেপাল ও ফিলিপিনে এর সুবিধা ভোগ করছে। তাতে ফসল উৎপাদনের পাশাপাশি পরিবেশ রক্ষায় ভূমিকা রাখছে কৃষক। এ কারনে এই সেচ পদ্ধতি এবং গবেষনা সংশ্লিষ্ট সকলের কাছে পৌছে দিতে চান তারা।
Leave a Reply