1. admin@renesus.news : admin :
  2. Biddut@renesus.news : Biddut :
  3. renesus.news@gmail.com : renesus :
  4. info@renesus.news : shamaun :
শুক্রবার, ০৯ মে ২০২৫, ০২:৪২ পূর্বাহ্ন

ছবি-টিকটক পোস্ট, শিক্ষিকাকে স্কুলে প্রকাশ্যে কান ধরে ওঠবস!

রিপোটারের নাম :
  • প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার, ২৫ আগস্ট, ২০২২
  • ৫৬৭ বার পড়া হয়েছে

স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহীতে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক সহকারী শিক্ষিকাকে প্রকাশ্যে কান ধরে ওঠবস করানোর অভিযোগ উঠেছে। বুধবার (২৪ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে পবা উপজেলার হাড়ুপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এই ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী শিক্ষিকা রাজশাহী নগরীর হড়গ্রাম রায়পাড়া এলাকার বাসিন্দা। ২০০৮ সাল থেকে তিনি হাড়ুপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত। ২০০৬ সাল থেকে শিক্ষকতায় যুক্ত হন তিনি। ঘটনার পর থেকে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন তিনি।

এই শিক্ষিকা জানান, প্রতিদিনের মতো বুধবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে তিনি বিদ্যালয়ে এসেছিলেন। এ দিন সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষক স্বামীকে সঙ্গে নিয়ে বিদ্যালয়ে এসেছিলেন প্রধান শিক্ষক নাজমা ফেরদৌসি। অন্যান্য শিক্ষকরাও ছিলেন। শিক্ষার্থীরাও ছিল ক্যাম্পাসে।

ফেসবুকে ছবি দেওয়া নিয়ে সবার সামনেই তাকে তিরস্কার করেন প্রধান শিক্ষক। এরপর বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতির বাবা ও অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আব্দুল আজিজকে ডেকে আনেন। আব্দুল আজিজ তাকে কান ধরে ওঠবস করতে বাধ্য করেন। এর আগে তাকে গালাগাল দেন, মারতেও উদ্ধত হন।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, প্রকাশ্যে ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটলেও প্রতিবাদ জানাননি প্রধান শিক্ষক ও তার শিক্ষক স্বামী। উল্টো ঘটনা জানাজানি হলে বদলি এমনকি চাকরিচ্যুতির হুমকি দেন।

ভুক্তভোগী এই শিক্ষিকা জানান, এই ঘটনায় তিনি চরমভাবে অপমানবোধ করেছেন। মানসিকভাবে ভেঙেও পড়েছেন। ঘটনার পর বিষয়টি তিনি সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোসা. রুনা লায়লাকে জানিয়েছেন। প্রতিকার চেয়ে লিখিত অভিযোগ দিতে বিদ্যালয় ছুটির পর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার দপ্তরেও গিয়েছিলেন। কিন্তু অফিস ছুটি হয়ে যাওয়ায় অভিযোগ দেওয়া যায়নি।

ভুক্তভোগী শিক্ষক দাবি করেন, তিনি মূলত বাটন মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন। তার একটি অ্যান্ড্রয়েড ফোনও আছে। তাতে ফেসবুক আইডি চালু থাকলেও সেটি তিনি ব্যবহারে অভ্যস্ত নন। ওই ফোনটি বাসায় থাকে। বাচ্চারা সেটিতে গেম খেলে, ছবি তোলে। তার অজান্তে মোবাইলে থাকা সকল ছবি দিয়ে টিকটক ভিডিও বানিয়েছিল শিশুরা। কিন্তু জানতে পেরে সেগুলো মুছে দিয়েছিলেন তিনি।

জান্নাতুল ফেরদৌস জানান, শনিবার রাতে তাকে বান্ধবীর সঙ্গে তোলা একটি ছবি হোয়াটসঅ্যাপে পাঠান প্রধান শিক্ষক। ফোন ওই সময় তার বোনের কাছে ছিল। অসাবধানতায় ছবিটি ফেসবুকের মাই-ডেতে চলে যায়।

রবিবার সকালে তিনি বিদ্যালয়ে যান। সেদিন প্রধান শিক্ষক নাজমা ফেরদৌসি ছুটিতে ছিলেন। তাকে প্রধান শিক্ষকের ছবি ফেসবুকে শেয়ার করা নিয়ে জেরা করেন আরেক সহকারী শিক্ষক ইসমত আরা শিউলি। বিষয়টি অসাবধানতাবশত উল্লেখ করে তিনি ক্ষমতা চান।

তারপরও বিষয়টি প্রধান শিক্ষককে জানান ইসমত আরা শিউলি। তার বাড়িতে আরেক সহকারী শিক্ষিকা জেসমিন সুলতানা ববিকে পাঠিয়ে জোর করে মোবাইল ফোনটি আনান। রোববার পর্যন্ত ফোনটি তাদের কাছেই ছিল।

তবে ওই শিক্ষিকাকে কান ধরে ওঠবস করানোর অভিযোগ অস্বীকার করেন প্রধান শিক্ষক নাজমা ফেরদৌসি। তিনি পাল্টা অভিযোগ করেন, ওই শিক্ষিকা দীর্ঘ দিন ধরেই তার ব্যক্তিগত ছবি নিজের ফেসবুকে দিয়ে আসছিলেন। টিকটক ভিডিও বানিয়ে ফেসবুকে প্রচারও করে আসছিলেন। বারবার সতর্ক করা সত্ত্বেও তিনি তা আমলেই নেননি। বিষয়টি তিনি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদেরও জানানো হয়েছে।

জানতে চাইলে অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোসা. রুনা লায়লা। তিনি বলেন, প্রধান শিক্ষক আগে তাকে বিষয়টি জানিয়েছিলেন। পরে ভুক্তভোগী ওই শিক্ষকও জানিয়েছেন। ঘটনাটি তার কাছে দুই শিক্ষকের দীর্ঘ দিনের অন্তর্দ্বন্দ্বের কারণেই ঘটেছে বলে মনে হয়েছে। দুপক্ষকে নিয়ে বসা হবে।

শিক্ষককে কান ধরে ওঠবস করানোর ঘটনা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না বলে মন্তব্য করেছেন উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. রফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, বুধবার বিকেলের দিকে প্রধান শিক্ষিকা মোবাইলে তাকে একটি সমস্যার কথা জানিয়েছেন। কিন্তু তিনি বিষয়টি খোলাসা করেননি। তাছাড়া ভুক্তভোগী এ নিয়ে কোনো অভিযোগ করেননি। সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তাও জানাননি বিষয়টি। খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

যোগাযোগ করা হলে বিষয়টি তার জানা নেই বলে জানিয়েছেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আব্দুস সালাম। তবে খোঁজ নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।

এই সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
কারিগরি সহযোগিতায়: সিসা হোস্ট